জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দেশব্যাপী নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার তদারকি কার্যক্রম অধিদপ্তরের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা চাই আমাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা থাকুক। তাদের আরও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করার জন্য গাইডলাইন তৈরি করা হবে।
রোববার (১১ আগস্ট) অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে বাজার তদারকিসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ের লক্ষ্যে আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সুব্রত কুমার দেব, কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মিজানুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বিন ইয়ামীন মোল্লা প্রমুখ।
মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এখন সুযোগ এসেছে বাজারকে একটা স্বস্তির জায়গায় নিয়ে যাওয়ার। যে কারণে সারাদেশের ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ের লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ভিত্তিক সমন্বয়করা অধিদপ্তরের জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। এছাড়াও অধিদপ্তরের বাজার তদারকিসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ের লক্ষ্যে অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও জেলার সমন্বয়কসহ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে মতবিনিয়ম সভার আয়োজন করা হবে।
তিনি বলেন, আজকের মতবিনিময় সভার কার্যবিবরণী সমন্বয়কদের কাছে পাঠানো হবে। এছাড়াও অধিদপ্তর কর্তৃক সুপারিশ সম্বলিত বিভিন্ন মতবিনিয়ম সভার প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের ৫ জন কর্মকর্তাসহ বিভাগ ও জেলা কার্যালয়ের একজন করে ফোকাল কর্মকর্তা থাকবেন যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয়, বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের সময় এসেছে। এখন মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতার উন্নয়ন প্রয়োজন। আমরা শপথ করবো, দুর্নীতি করবো না, কোনো স্বজনপ্রীতি করবো না, সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি ও দখলদারি করবো না। আমরা নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন না নিয়ে আসলে দেশ আবার আগের মতো হয়ে যাবে।
এ সময় তিনি কয়েকটি প্রস্তাবনা দেন। সেগুলো হলো-
১. বিপ্লবী ছাত্র জনতা থেকে টিম করে শহর ও পাড়া-মহল্লায় বাজার তদারকি করা এবং অধিদপ্তরের কাজে সমন্বয় ও সার্বিক সহযোগিতা করা।
২. প্রতিটি জেলা-উপজেলায় তদারকি কার্যক্রমে সমন্বয়ের জন্য এরূপ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা।
৩. পণ্য ক্রয় বিক্রয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে অবশ্যই পাকা রশিদ সংরক্ষণ করা।
৪. আবশ্যিকভাবে প্রতিটি দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা।
৫. বাজার, রাস্তা, সরকারি জায়গা দখল করলে তাদের উৎখাত করা।
৬. সব প্রকার চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৭. এলাকা ভিত্তিক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা তৈরি করা।
৮. অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৯. দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।
১০. সরকারের অন্যান্য সেবা খাতের জন্যও এরূপ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা।
১১. ছাত্র-জনতা অন্যায়ের সঙ্গে সংযুক্ত না হওয়া।
১২। এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে স্থিতিশীলতা আনয়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
Discussion about this post