আন্তর্জাতিক ডেস্ক
শ্রীলঙ্কায় গতকাল অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেই অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে এখন চলছে ভোট গণনা। আর ভোট গণনায় প্রাথমিকভাবে এগিয়ে আছেন মার্ক্সবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত অনুড়া কুমারা দিসানায়েক। খবর বিবিসি, রয়টার্স।
রোববার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, রোববার সকাল পর্যন্ত প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে ভোট গণনায় বড় সংগ্রহ নিয়ে এগিয়ে আছেন দিসানায়েক। গণনাকৃত ভোটের প্রায় ৫০ শতাংশ জিতেছেন তিনি। দেশটিতে একজন প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করতে মোট ভোটের ৫১ শতাংশ প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আজ রোববার চূড়ান্ত ফলাফল জানা যেতে পারে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় দিসানায়েক দুর্নীতি বিরোধী কঠোর ব্যবস্থা এবং সুশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যা দেশটির জনগণের মধ্যে পরিবর্তনের আশার সঞ্চার করেছে।
বিবিসি আরও জানিয়েছে, প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা মোট ভোটের প্রায় ২৬ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে ১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন।
অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যুত এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া প্রেসিডেন্টের ভাগ্নে নামাল রাজাপাকসে ভোট গণনায় এ পর্যন্ত ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশটির বৈধ ১৭ মিলিয়ন (১ কোটি ৭০ লাখ) ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ গতকালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। এর আগে ২০১৯ সালের নির্বাচনে রেকর্ড ৮৩ দশমিক ৭২ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
শ্রীলঙ্কার আইন অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি অর্ধেকের বেশি ভোট না পান, তবে অগ্রাধিকার ভোটের ওপর নির্ভর করে বিজয়ী প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। তবে দেশটির ইতিহাসে এর আগে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ভোট গণনার মধ্যেই শ্রীলঙ্কায় গতকাল দিবাগত রাতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশ আট ঘণ্টার জন্য কারফিউ ঘোষণা করে। ‘জনসাধারণের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা’ করে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
এর আগে গতকাল শনিবার দেশটিতে প্রেসিডেন্টে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রোববার চূড়ান্ত ফলাফল জানা যেতে পারে। ২০২২ সালে দেশটিতে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট ও প্রেসিডেন্ট পলায়নের পর প্রথমবারের মত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশটিতে।
শ্রীলঙ্কার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৩৯ জন। তবে এদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। বিরোধী দল সঙ্গী জন বালাওয়াগার (এসজেবি) নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা এবং ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের অনুড়া কুমারা দিসানায়েক।
নির্বাচনে এই তিন প্রার্থীর মধ্যে যে জয়ী হবেন তাকে ঋণে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে ঘুরে দাড় করানোর চ্যালেঞ্জ নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
Discussion about this post