আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনজিভির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি বিবেচনা করছে যুক্তরাজ্য। গাজা এবং পশ্চিম তীরের সাধারণ মানুষদের নিয়ে তাদের মন্তব্যের কারণে এমন পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার।
এর আগে গত জুলাইয়ের নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয়ের আগে সে সময়কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও স্মোট্রিচ এবং বেনজিভির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করেছিলেন।
স্টারমারও সংসদে জানিয়েছেন যে, তিনিও এ ধরনের কিছু করার উপায় খুঁজছেন। গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের অন্নহীন থাকার ব্যাপারটি ন্যায়সঙ্গত হতে পারে বলে স্মোট্রিচের মন্তব্য এবং ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতায় সম্পৃক্ত বসতি স্থাপনকারীদেরকে নায়ক বলে করা বেনজিভির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্টারমার।
তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি, কেননা, এগুলো স্পষ্টতই ঘৃণ্য মন্তব্য। স্মোট্রিচ এবং বেনজিভির অবশ্য জানিয়েছেন যে, নিষেধাজ্ঞার হুমকি তাদের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আনবে না।
এক বিবৃতিতে বেনজিভির বলেন, এসব আমাকে ভীত করে তুলছে না এবং আমি শুধুমাত্র ইসরায়েলের সর্বোচ্চ জাতীয় স্বার্থ অনুযায়ী কর্তব্য পালন করবো।
আর স্মোট্রিচ এক বিবৃতিতে বলেন, কোনো হুমকিই আমাকে ইসরায়েলের নাগরিকদের জন্য সঠিক এবং নৈতিক কাজ করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না।
ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং আলজেরিয়ার আহ্বানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে এক জরুরী আলোচনার আগে নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নিয়ে মন্তব্য করেন স্টারমার। তার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ইসরায়েলের বিষয়ে কিছুটা কঠোর অবস্থান নিয়েছে, যদিও সেটি দেশটির আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে।
এটি ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির কিছু লাইসেন্স সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে, কেননা, দেশটি মনে করছে কিছু সরঞ্জাম আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহারের ঝুঁকি রয়েছে। যুক্তরাজ্য মঙ্গলবার পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী সংগঠনের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে।
স্টারমার বুধবার আইনপ্রণেতাদের জানিয়েছেন যে, গাজায় মানবিক পরিস্থিতি মারাত্মক পর্যায়ে রয়েছে। ইসরায়েলের অবশ্যই বেসামরিক প্রাণহানি রোধে সম্ভাব্য সব উদ্যোগ নেয়া উচিত, যাতে গাজায় আরো অনেক বড় আকারে ত্রাণ পাঠানো যায় এবং জাতিসংঘের মানবিক সহযোগীরা কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে, বলেন স্টারমার।
চলতি মাসের শুরুর দিকে রয়টার্স জানিয়েছিল যে, ইসরায়েল নতুন এক শুল্ক নিয়ম চালুর পর গাজায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে খাদ্য সরবরাহ বেশ কমে গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে, মানবিক পরিস্থিতির অবশ্যই উন্নতি ঘটাতে হবে, নতুবা মার্কিন সামরিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধের মুখে পড়তে পারে ইসরায়েল। জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি জানিয়েছেন যে, দেশটি যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
Discussion about this post