নিজস্ব প্রতিবেদক
আট দফা দাবি আদায়ে ডাক দেয়া আন্দোলনের সমস্ত কার্যক্রম ১৫ দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। বুধবার রাতে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ফেসবুকে দেয়া এক ভিডিওবার্তায় এ ঘোষণা দেন।
পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘হাজারি লেইনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা লক্ষ্য করছি দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির প্রয়াস চলছে। পুরো দেশের সামগ্রিক স্থিতিশীলতাকে আমরা যে এতদিন ধরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বিঘ্নভাবে কোনো ধরনের ভায়োলেন্স সৃষ্টির প্রয়াসকে সুযোগ না দিয়ে যে সুন্দর ৮ দফাভিত্তিক আন্দোলন করছি এটাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার বিভিন্নজন প্রয়াস করছে। আমরা কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে এই ধরনের প্রয়াসে সুবিধা লাভ করার সুযোগ দিতে পারি না। এজন্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ৩ কোটি জনসাধারণের যে আবেগ ৮ দফা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদানকারী সনাতন জাগরণী মঞ্চ এবং সংখ্যালঘু জোট মিলে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি রাষ্ট্র এবং সরকারকে সহযোগ দেয়ার জন্য গণতান্ত্রিক বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের প্রতি যে অনুরোধ রেখেছেন সে অনুরোধের প্রতি আমরা সহযোগ প্রদান করে আজকে থেকে আগামী ১৫ দিন সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত করছি।’
তিনি বলেন, এরমধ্যে আমাদের যশোরে মন্দিকে মুকুট চুরিসহ সাতক্ষীরায় সমাবেশ, খুলনায়সহ বিভিন্ন কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচি আমরা স্থগিত করছি। আমরা অনুরোধ করবো আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে যোগদানকারী প্রতিটি সংগঠন প্রতিটি সনাতনী জনগোষ্ঠী আমাদের সিদ্ধান্তকে অনুসরণ করবেন। আমরা রাষ্ট্র বিনির্মাণে সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই।’
প্রবর্তক ইসকন শ্রী কৃষ্ণ মন্দিরের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাতে ফেসবুকে চিন্ময় প্রভু একটি বিবৃতি দিয়েছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরামর্শ মতে এই আন্দোলন ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যেহেতু একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে সেই প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত।’
এর আগে, গত ১লা নভেম্বর নগরের লালদীঘি মাঠে গণসমাবেশ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সমাবেশ থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেয়া হয়। এ সময় সমাবেশ থেকে সনাতনীদের ‘অস্তিত্ব রক্ষায়’ আট দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।আট দফা দাবির মধ্যে ছিল সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করা, জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, দেবোত্তর সম্পত্তি আইন প্রণয়ন করা, পার্বত্য চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন করা প্রভৃতি।
Discussion about this post