নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ৩২ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৪টা থেকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩২ জন শিক্ষার্থীর কেউ মেঝেতে তোষক বিছিয়ে বসে আছেন, আবার কেউবা শুয়ে আছেন। পাশে কয়েকটি স্ট্যান্ড ফ্যান রয়েছে। এ ছাড়া ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে কুয়েটের একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা আছে।
এ সময় কথা হলে রাতে কিছু খাননি বলে অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান।
অনশনরত শিক্ষার্থী রাহাত, তৌফিক, গালিব, মহিবুজ্জামান উপল ও ওবায়দুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, উপাচার্যকে অপসারণ না করা পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। প্রয়োজনে জীবন দেবেন।
প্রশ্ন রেখে তারা আরও বলেন, ৩২ জন শিক্ষার্থীর জীবনের চেয়ে কি উপাচার্যের চেয়ার বড়?
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা হামলা করলেও কুয়েট প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হামলাকারীদের নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাত পরিচয় লোকজনের বিরুদ্ধে দায়সারা একটি মামলা করেছে কুয়েট প্রশাসন। হামলার ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
তারা আরও বলেন, কিছুদিন আগে বহিরাগত একজন বাদী হয়ে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কুয়েট কর্তৃপক্ষ ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এরমধ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা গত ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। ২ রাত তারা খোলা আকাশের নিচে থাকার পর ১৫ এপ্রিল তালা ভেঙে হলে ঢোকেন। কিন্তু হলে খাবার, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ তাদের দাবি পূরণের উদ্যোগ নেয়নি। তাই তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছেন।
এ বিষয়ে কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদেরকে ২ বার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে। আবারও শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করার ব্যাপারে কথা বলব।
এর আগে, রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ক্যাম্পাসে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলনে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম দেন। এ সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে তারা আমরণ অনশনে যাবেন বলেও জানান।
Discussion about this post