নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাভার সরকারি কলেজের সভাপতি ইমু ইমরান ও ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালের নানা অপকর্ম ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার জেরে প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাংবাদিক দিলশান আরা অনিমা।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এর বিচার দাবি করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন পিস্তল উচিয়ে তাকে হুমকি দিলেও থানায় কোন মামলা নেয়নি বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ঢাকা (মামলা নম্বর–৩৯৯)।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় গেলো ১৮ মে দৈনিক বাংলাদেশ সময় পত্রিকায় “সাভার সরকারি কলেজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ইমু ইমরান কীভাবে ছাত্রদলের সভাপতি হলেন” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক অনিমা।
প্রতিবেদনটিতে সাভারের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত ও সমালোচিত ছাত্রদল নেতা ইমু ইমরান এবং তার বড় ভাই ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালের নানা অপকর্ম ও অনিয়মের তথ্য প্রকাশিত হয়।
এরপর থেকেই অনিমাকে প্রকাশ্যে টার্গেট করে আসছেন ইমু ইমরান ও মাহফুজ ইকবাল। এছাড়া মাহফুজ ইকবালের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়ার নানা প্রমাণসহ তালাশ বিডি অনলাইন পত্রিকায় ২০ জুলাই ২০২৫ তারিখে “দলীয় পদ নাকি দুর্নীতির সিঁড়ি? ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালকে নিয়ে প্রশ্ন ও ক্ষোভ” শিরোনামে আরেকটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে প্রমাণসহ উল্লেখ করা হয়, প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের একটি নিশান গাড়ি (নম্বর: ঢাকা মেট্রো ঘ-১৫-২৬৮৭) এবং সাভারের অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান ও দোকান থেকে অবাধে চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে গড়া বিলাসবহুল জীবনযাপনের তথ্য। ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যবসায়ী এসব তথ্য অনিমাকে নিশ্চিত করেন বলে জানান তিনি।
সম্মেলনে অনিমা জানান, ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজ ইকবাল তার দলীয় পদবী ব্যবহার করে কলেজ ছাত্রদলের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তড়িঘড়ি করে নিজের ছোট ভাই ইমু ইমরানকে সভাপতি বানান। এতে যোগ্য ও মেধাবী ছাত্রনেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
দুটি সংবাদ প্রকাশের পর থেকে ইমু ইমরান ও মাহফুজ ইকবাল সমর্থিত সন্ত্রাসী চক্র একাধিক মোবাইল নম্বর থেকে সাংবাদিক অনিমাকে হত্যার হুমকি দিতে থাকে। এমনকি গত ১১ জুলাই রাত সাড়ে দশটার দিকে সাভারের থানা স্ট্যান্ড এলাকার “সুমাইয়া রেস্টুরেন্টে” ঢুকে ইমু ইমরান ও মাহফুজ ইকবাল তাকে চড়-থাপ্পড় মারে এবং কোমরে থাকা বিদেশি পিস্তল উঁচিয়ে সরাসরি হত্যার হুমকি দেয়। তারা স্পষ্টভাবে জানায় আর কোন বাড়াবাড়ি করলে কিংবা কিংবা কোন ধরনের সংবাদ প্রকাশ করলে প্রাণে মেরে ফেলবে। সেই থেকে তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
হুমকির পর জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও কর্তব্যরত কর্মকর্তা অপারগতা প্রকাশ করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে তিনি ঢাকা কোর্টে ১০৭ ধারায় মামলা করেন যার (নম্বর–৩৯৯)
প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিক অনিমা জানান দুই-ভাই দলীয় পদবী ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাভারে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করছে। তাদের সেমিপাকা বাড়িতে বহু তলা ভবন নির্মাণেরও প্রমাণ রয়েছে।
অনিমা বলেন, বর্তমানে তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছেন। এ নিয়ে প্রশাসনের সকল পর্যায়ে দ্বারস্থ হয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। প্রশাসনের পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি। দলীয় পদবী ব্যবহার করে অপকর্মে জড়িত ও এবং হত্যার হুমকিদাতা ইমু ইমরান ও মাহফুজ ইকবালের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তার নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা প্রদানের দাবি জানান সংবাদ সম্মেলনে। এসময় একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের কথা বলেন তিনি।
Discussion about this post