নিজস্ব প্রতিবেদক
ঝটিকা মিছিল থেকে ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগ ও দলটির ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ৪৬ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন ‘পানি জাহাঙ্গীর’র বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার অর্থপাচার মামলা
এদিকে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হিসাবে, চলতি বছরের ১০ মাসে ঝটিকা মিছিল থেকে এ নিয়ে প্রায় ৩ হাজার জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
শুক্রবার বিকেলে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ বিভিন্ন সংগঠন নানা সময়ে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল আয়োজনের মাধ্যমে জনমণে আতঙ্ক সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরীতে আজ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের ৪৬ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি।
এর মধ্যে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ ১৮ জনকে, সিটিটিসি ১৩ জনকে, খিলক্ষেত থানা পুলিশ ৪ জন, উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ২ জন, বাড্ডা থানা ৩ জন, বনানী থানা ৩ জন এবং তেজগাঁও থানা ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের ‘সক্রিয় সদস্য’ এবং তাদের ‘বেশির ভাগই’ ঢাকার বাইরে থেকে মিছিল করার জন্য এসেছেন।
এরমধ্যে ত্রিশাল, সিলেট, ফেঞ্চুগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বগুড়া, বরগুনা ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য থাকার তথ্য দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল পৌনে ৭টার দিকে ৯০ থেকে ১০০ জন মিছিলের জন্য জড়ো হলে শেরেবাংলা নগর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। ওই সময় সেখান থেকে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মিছিলের নামে ‘অপতৎপরতা’ রোধ করতে জন্য ডিএমপি সক্রিয় রয়েছে মন্তব্য করে এই কর্মকর্তা বলেছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। তারা আর কোনো অপরাধে জড়িত কিনা, যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
মিছিলের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়া এবং ঢাকা মহানগরীতে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির ‘অপচেষ্টা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা যেটা করে, মিছিল করে মিছিলের ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। তাদের যে তৎপরতা আছে, তারা যে সক্রিয় রয়েছে, তারা সেটা জানান দেয়।”
আরেক প্রশ্নের জবাবে তালেবুর রহমান বলেন, এটা আসলে গণগ্রেপ্তার বলা যাবে না। আমরা যেটা করছি, তাৎক্ষণিক ঝটিকা মিছিলে যাদের পাওয়া যাচ্ছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা গ্রেপ্তারের পর যাচাই-বাছাই করে দেখছি; তাদের পূর্বাপর ইতিহাস যাচাই-বাছাই করে সন্তুষ্ট হলেই মামলায় চালান দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগে আপনারা দেখেছেন, আমরা এক দিনে ২৪৪ জন; আরেক দিন ১৩১ জনকে ঝটিকা মিছিল থেকে গ্রেপ্তার করেছি। যারা ঢাকার বাইরে থেকে আসছে, আমরা নজরদারী অব্যাহত রেখেছি। এ কারণেই গ্রেপ্তারগুলো হচ্ছে।
মিছিলে অংশগ্রহণের বিনিময়ে কী পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন লোক ঢাকার বাইরে থেকে আসা-যাওয়া ও থাকা-খাওয়ার অর্থ না পেলে তো আসবেন না। ‘মোটিভেট’ করার জন্য আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আমরা বিষয়টা মাথায় রাখছি। যারা প্রণোদনা দিচ্ছেন, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি।
ঝটিকা মিছিল থেকে এ বছর ‘৩ হাজারের মতো’ গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, অবশ্যই ঝটিকা মিছিলে যারা জড়িত আছেন, সেই মিছিলে সরাসরি অংশগ্রহণের অভিযোগে এবং মিছিলের ঘটনাস্থল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
অপর একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে রাজনৈতিক তৎপরতা একটু বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা এসব বিষয় মাথায় রেখেই আমাদের নির্বাচনি প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা সতর্ক রয়েছি এবং আমাদের নজরদারিও রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। যেকোনো ধরনের অপতৎরতা রুখে দেওয়ার সক্ষমতা ডিএমপির রয়েছে।
 
			 
                                









Discussion about this post