প্রযুক্তি ডেস্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কনীতিতে টালমাটাল পুরো বিশ্ব। বিভিন্ন দেশের রপ্তানিপণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছিল, এর ফলে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেটসহ প্রায় সব রকমের ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের দাম ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে, যার প্রভাব পড়তে পারে পুরো বিশ্বে। বলা হচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রে কেবল আইফোনের দামই বেড়ে যেতে পারে কয়েকশ ডলার। তবে, এবার জানা গেল, মোবাইল-কম্পিউটারকে নয়া শুল্কনীতির আওতামুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দপ্তরের নতুন গাইডলাইনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মার্কিন প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দপ্তরের নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারের ওপর নয়া শুল্কনীতি কার্যকর হবে না।
কয়েক দিন আগেই আমেরিকার বাজারে চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্প ১৪৫ শতাংশ চাপিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা ‘অ্যাপল’-এর আইফোন এবং অন্য পণ্যগুলোর বেশিরভাগই উৎপাদিত হয় চীনে। সে ক্ষেত্রে চীনা পণ্যে চড়া হারে শুল্কের কারণে আমেরিকার বাজারে ‘অ্যাপল’-এর পণ্যের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল এবং কম্পিউটারকে আমদানি শুল্কের নয়া নীতি থেকে বাদ দিলো ট্রাম্প প্রশাসন।
সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অ্যাপল’-এর ৮০ শতাংশেরও বেশি পণ্য চীনে তৈরি হয়। ওই মার্কিন বহুজাতিক সংস্থার প্রায় ৮০ শতাংশ আইপ্যাড তৈরি হয় চীনে। অ্যাপল যত কম্পিউটার তৈরি করে, তার অর্ধেকেরও বেশি তৈরি হয় চীনেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও অবশ্য চাইছিলেন যাতে ‘অ্যাপল’ এবং অন্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলো আমেরিকাতেই তাদের পণ্য উৎপাদন করে। চলতি সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের প্রেসসচিব ক্যারোলিন লেভিটও সেই আভাস দিয়েছিলেন।
তিনি জানিয়েছিলেন, আমেরিকার মাটিতে ৫০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘অ্যাপল’। সে ক্ষেত্রে মার্কিন শুল্কের কারণে আমদানির খরচ সামলাতে আমেরিকার মাটিতেই অ্যাপল নিজেদের পণ্য তৈরি করবে বলে আশা করছেন ট্রাম্প।
তবে, আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দপ্তরের নতুন গাইডলাইন থেকে অনেকেই অনুমান করছেন, ওই ভাবনাচিন্তা থেকে হয়ত সরে এসেছে মার্কিন প্রশাসন। সম্ভবত সেই কারণেই মোবাইল এবং কম্পিউটারের ওপর শুল্কে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোবাইল, কম্পিউটারের পাশাপাশি সৌর ব্যাটারি, টেলিভিশনের ডিসপ্লে, মেমোরি কার্ড, সেমিকন্ডাক্টর-সহ বেশ কিছু বৈদ্যুতিক পণ্যকেও নয়া শুল্কনীতির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এই পণ্যগুলোর বেশিরভাগেরই আমেরিকায় খুব বেশি উৎপাদনকেন্দ্র নেই।
Discussion about this post