তানজিনুল ইসলাম তামিম
দেশের সাহিত্য অঙ্গনে এক পরিচিত নাম তানজীনা ফেরদৌস। কবিতা, আবৃত্তি, এবং আইন পেশার সমন্বয়ে তিনি এক বর্ণিল জীবন যাপন করছেন। বাবার অনুপ্রেরণা আর ছোটবেলা থেকে লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা তাকে আজকের অবস্থানে এনেছে।
তানজীনা ফেরদৌসের জন্ম ১১ নভেম্বর, যশোর জেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের তপসীডাঙা গ্রামে। বাবা মো. মোফাজ্জেল হোসেন একজন কলেজের সহকারী অধ্যাপক, যিনি কর্মজীবনের বাইরেও পড়াশোনায় মগ্ন থাকেন। মা ফাতেমা হোসেন একজন গৃহিণী। তাঁর ছোট ভাই অমিত হাসান শান্ত। তানজীনা ফেরদৌস ছোটবেলা থেকেই বাবার অনুপ্রেরণায় ছড়া ও ছোট গল্প লেখা শুরু করেন তানজীনা। স্কুলের বিভিন্ন রচনা প্রতিযোগিতা, দেওয়াল পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তার সাহিত্যিক প্রতিভার উন্মোচন ঘটে।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় ‘অংক’ ভীতি থেকে তিনি ‘অংক’ নামে তার প্রথম ছড়া লেখেন, যা ছিল লেখালেখির জগতে তার আনুষ্ঠানিক প্রবেশ। এরপর ধীরে ধীরে তিনি কবিতার জগতে প্রবেশ করেন এবং হাতে তুলে নেন “হিরণ্ময় অস্ত্র কবিতা”।
তানজীনা ফেরদৌসের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝগড়ার বয়স বাড়ুক’ আত্ম-পরিভ্রমণের এক অনন্য উপলব্ধিকে তুলে ধরে। এরপর প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমের হুলিয়া জারি হোক তোমার নামে’ এবং তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘খামবন্দি প্রেমের রসায়ন’। দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে তার কবিতা নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে।
তানজীনা ফেরদৌস তার সাহিত্যকর্মের জন্য ইতোমধ্যে একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
* *বঙ্গসভা পুরস্কার ২০২৩*
* *আন্তর্জাতিক সৃজন কলা পদক ২০২৩*
* *আন্তর্জাতিক সৃজন কলা পদক ২০২৪*
* *Excellence In Success Award 2025*
এছাড়াও তিনি আরও বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।
কবিতার প্রতি তার ভালো লাগা শুধু লেখালেখিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি; ছোটবেলা থেকেই তিনি আবৃত্তি চর্চা করতেন। পরবর্তীতে আবৃত্তি শেখার আগ্রহ থেকে ‘বৈতরণী’ নামে একটি আবৃত্তি সংগঠনের সঙ্গেও তিনি যুক্ত হন।
শিক্ষাজীবনে তানজীনা ফেরদৌস যশোরের সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ডা. আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। পরবর্তীতে ঢাকায় মোহাম্মদপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা জজ কোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত আছেন। একইসাথে তিনি কথার কাগজ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক এবং শব্দ মুকুর জীবন যাপনের প্রতিমাসের পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক হিসেবেও কর্মরত আছেন।
পেশাগত জীবন এবং সাহিত্যচর্চার মাঝে তানজীনা ফেরদৌস এক দারুণ ভারসাম্য বজায় রেখেছেন, যা তাকে একজন সফল ও অনুপ্রেরণামূলক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
Discussion about this post