নিজস্ব প্রতিবেদক
গর্ভনর ভালভ স্টিম সেন্সরের চারটি টারবাইন বিকল হয়ে যাওয়ায় পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটায় এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়। কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, টারবাইন নষ্ট হওয়ায় তৃতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
এই ইউনিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলের আটটি জেলায় বিদ্যুৎ লোডশেডিং শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এই ইউনিট থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৬০ থেকে ১৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হতো, যার জন্য দৈনিক ১,৬০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হতো। বর্তমানে কেন্দ্রের সচল থাকা একমাত্র ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্রথম ইউনিট থেকে মাত্র ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই ইউনিটটি চালু রাখতে প্রতিদিন ৮০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন।
অন্যদিকে, কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে সংস্কারের কাজ চলায় প্রায় চার বছর আট মাস ধরে বন্ধ রয়েছে; ইউনিটটি সাধারণত ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম ছিল। কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট মিলে মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট হলেও তিনটি ইউনিট কখনোই একসাথে চালু করা সম্ভব হয়নি।
স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য কেন্দ্রটির দৈনিক প্রায় ৫,২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ইয়ার্ডে প্রায় ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত রয়েছে এবং খনি থেকে দৈনিক ৩,০০০ মেট্রিক টন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত আটটায় প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, তৃতীয় ইউনিটের মেরামত কাজ দ্রুত চলছে। ইতিমধ্যে আমরা চীনের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করেছি। আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় ইউনিটটি আবারও বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরবে।
এদিকে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের পাশাপাশি মেরামতের কারণেও গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পার্বতীপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. জহুরুল হক জানান, সৈয়দপুর সাব স্টেশনের মেরামত কাজের কারণে শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পার্বতীপুর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ থাকবে। পার্বতীপুর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৮০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন, যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা ১৭ মেগাওয়াট থাকলেও সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৮ থেকে ৯ মেগাওয়াট।
Discussion about this post