নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনে বেক্সিমকো গ্রুপের ৯৪টি কোম্পানির শেয়ার এবং সালমান এফ রহমানের পরিবারের ঘনিষ্ঠ ৭৯ জনের বিও হিসাব অবরুদ্ধ করেছে আদালত।
বুধবার (৭ মে) ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শিল্প-বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তাঁর স্ত্রী, ছেলে, ভাই, ভাইপোসহ পরিবারের সদস্যদের সব শেয়ার ও বিও হিসাবও অবরুদ্ধ থাকবে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে তাঁদের নামে থাকা ৩৭২টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়।
দুদকের অনুসন্ধান বলছে, প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিদেশে পাচারেরও তথ্য উঠে এসেছে, যার মধ্যে রয়েছে আরব আমিরাতে প্রতিষ্ঠিত আরআর গ্লোবাল ট্রেডিং ও আরআর হোল্ডিং লিমিটেড।
সিআইডির তথ্য অনুসারে, সালমান এফ রহমান ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা প্রায় ২ হাজার শতাংশ জমি, গুলশানের একটি ফ্ল্যাটসহ ২৫০ কোটি টাকার সম্পদ ইতিমধ্যে ক্রোক করা হয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের খেলাপি ঋণ: বর্তমানে বেক্সিমকোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২,০৯৫ কোটি টাকা। যদিও গ্রুপটি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ৩১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলো:
জনতা ব্যাংক: ২৩,২৮৫ কোটি টাকা
সোনালী ব্যাংক: ১,৪২৪ কোটি
অগ্রণী ব্যাংক: ৪২০ কোটি
রূপালী ব্যাংক: ৯৮৭ কোটি
ন্যাশনাল ব্যাংক, এবি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংকসহ আরও অন্তত ১২টি ব্যাংক উচ্চ ঝুঁকিতে।
কারখানা ও উৎপাদন: বেক্সিমকো কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তাঁদের সব কারখানা চালু রয়েছে এবং উৎপাদন বন্ধ হয়নি। তবে গাজীপুরে তাদের ১৪টি গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ থাকায় অন্তত ৪২ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। বকেয়া পরিশোধে সরকার সম্প্রতি ৫২৫ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।
শ্রমিকদের দাবি ও সংকট: শ্রমিকরা দাবি করছেন, কারখানা চালু রেখে দায় পরিশোধ করতে দেওয়া হোক। বন্ধ থাকায় ১০ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানান তাঁরা। এ অবস্থায় আদালত বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠানে রিসিভার নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন।
Discussion about this post