নুরুল ইসলাম সেলিম, কক্সবাজার:
কক্সবাজারের রামু খুনিয়াপালং ইউনিয়নে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় (ডব্লিউএফপি) ওয়ারহাউজে রোহিঙ্গা লোকজন দিয়ে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ওয়ারহাউজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে এলাকার জনসাধারণ।
রামু খুনিয়াপালং ইউনিয়নের রোহিঙ্গ থুংঙ্গাকাটা এলাকায় হাজী আনোয়ার হোসনের প্রায় ৩ একর ধানি জমিতে চুক্তিভিত্তিক বার্ষিক ভাড়া নিয়ে ডব্লিউএফপি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে যা পরিবেশের ভারসাম্যের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
টেকনাফ – উখিয়ায় বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে এই ওয়ারহাউজ। এই ব্যাপারে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ।
প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকার আরআই কনস্ট্রাকশন বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গিয়ে কথা বলে জানা যায়, ওয়ারহাউজ নিমার্ণের কাজে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে ৭৫ জন রোহিঙ্গা লোকজন নিয়ে সাইডে কাজ করার মত গুরুতর অভিযোগ তুলেছে সচেতন মহল।
প্রতিদিন রোহিঙ্গা যুবকদের মাধ্যমে রাত -দিন কাজ করে ওয়ারহাউজের বাউন্ডারি দেয়াল, মাটি ভরাট,গভীর নলকূপ,লেবার সেড,ওয়ারহাউজের সেডসহ প্রতিটি কাজে সক্রিয় ভাবে সম্পৃক্ত থাকার সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেছে।
এই ব্যাপারে সাইডে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোহিঙ্গা যুবকদের কাজে ব্যবহার করার ফলে স্থানীয় লোকরা বাধাঁ প্রদান করেন। যার কারনে তাদের দিয়ে কাজ বন্ধ করা হয়েছে। তবে সাইডে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার ও লোকজনের সাথে নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে কাজের মান বজায় না রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোন রকম সদউত্তর দিতে পারেনি।

উক্ত বিষয়ে ডব্লিউএফপি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে যোগায়োগের চেষ্টা করার জন্য মোবাইল নম্বর চাওয়া হলে এরা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ডব্লিউএফপির নিয়োজিত ঠিকাদার মোহাং জাকারিয়া যার মোবাইল নং ০১৭১৩৭৫০৬৩৮ এর সহিত কথা বললে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লোকজন দিয়ে কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করলেও ডব্লিউএফপি কক্সবাজার এর অফিসের সাথে যোগায়োগ করে বিস্তারিত জানার কথা বলে এড়িয়ে যান।
ডব্লিউএফপি’র নিম্মমানের কাজের বিষয়ে স্থানীয় রামু খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক কোম্পানীর সাথে যোগায়োগ করা হলে তিনি বলেন, ডব্লিউএফপি একটি আন্তর্জাতিক মানের খাদ্য সংস্থা হিসাবে সু- পরিচিত। এদের অধিনে এলাকায় একটি ওয়ারহাউজ নির্মাণ করা হচ্ছে অথচ তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। তার এলাকায় উখিয়া- টেকনাফ এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে লোক এনে কাজ করায় হোম কমিউনিটি জনগোষ্ঠীর মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা লোকজন দিয়ে কাজ করার বিষয়টি প্রশাসনকে তাৎক্ষণিক ভাবে জানানো হয়েছে। ডব্লিউ এফপি তার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোন অনুমতি না নিয়ে এবং এক জায়গা থেকে অন্য এলাকায় রোহিঙ্গা প্রবেশ করে এলাকার পরিবেশ ও ভারসাম্য নষ্ট করেছেন বলে জানান। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহন জরুরি বলে জানিয়েছেন।
রামু নির্বাহী অফিসার ইরফানুল হক চৌধুরী কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন স্থানীয় হোম কমিউনিটি কে তোয়াক্কা না করে উখিয়া থেকে রোহিঙ্গা জনবল এনে তাদের ইচ্ছামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ তাদের এই পদক্ষেপের জন্য এখনও কোন রকম ব্যবস্থা গ্রহন করেন নাই।
এই বিষয়ে স্থানীয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টির সত্যতা পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
উক্ত ব্যাপারে রামু নিবার্হী অফিসার ইরফানুল হক চৌধুরীর সাথে ডব্লিউএফপির ওয়ারহাউজ নির্মাণ ও রোহিঙ্গা দিয়ে কাজের জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডব্লিউএফপি ওয়ারহাউজ নির্মাণের বিষয়টি শুনেছেন এই ব্যাপারে খোজঁ খবর নিয়ে রোহিঙ্গা দিয়ে কোন রকম কাজ করা হয়েছে কিনা তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান। এই রকম কিছু করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন এবং ওয়ারহাউজ নির্মাণে নিম্মমানের কাজ করা হচ্ছে কিনা তা তদন্ত পূর্বক সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।
স্থানীয় জনগনের দাবী ডব্লিউএফপি চাষের জমিতে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহের মত ওয়ারহাউজ নিমার্ণ করে হোম কমিউনিটি ও এলাকার সুন্দর পরিবেশ ভারসাম্য নষ্ট করছে । এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করার মাধমে তৈরি করা হচ্ছে যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তাই উক্ত বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছন সচেতন মহল।










Discussion about this post