নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে। ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ থেকে প্রাথমিকভাবে প্রত্যেক শহিদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা এবং আহত প্রত্যেক ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা করে দেয়া হবে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই সভা হয়। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগেই সিদ্ধান্ত আছে, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার খরচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সভায় বলেন, যেকোনো পরিমাণ অর্থদান নথিভুক্ত করতে হবে এবং দাতাদের তালিকাও সংরক্ষণ করা উচিত। যদি সম্ভব হয় তাদের নাম ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
তিনি আরও জানান, আহতদের চিকিৎসার খরচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বহন করবে। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আহতদের যে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে, তা সরকারের চিকিৎসা ব্যয়ের পাশাপাশি হবে।
সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব ও ক্রীড় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহাবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এবং কোষাধ্যক্ষ কাজী ওয়াকার আহমদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে জুলাইয়ের শুরুতে যে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়, তা তীব্র আকার ধারণ করে ১৫ জুলাইয়ের পর। ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে মারা যান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ। সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ৫ জন নিহত হন। আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে সহিংসতা। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
আন্দোলন শুরুর পর গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ অগাস্ট সরকার পতনের দিন পর্যন্ত সারাদেশে অন্তত ৬৩১ জন নিহত এবং ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষ আহত হওয়ার তথ্য তথ্য সঙ্কলিত করা হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে। গত মঙ্গলবার ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’এ ১০০ কোটি টাকা অনুদান দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এই টাকা দেয়া হয়।
Discussion about this post