নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে বসতঘরে ঢুকে তাকে (২৫) ধর্ষণের করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পরে ছাত্রলীগ নেতা সুমন তার লোকজন নিয়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ভিডিও করেন। বৃহস্পতিবার রাতের এ ঘটনায় ওই নারী শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে স্থানীয় যুবক ফজর আলীকে।
এদিকে নির্যাতনের ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শনিবার রাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীকে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
রোববার (২৯ জুন) সামাজিকমাধ্যমে একটি পোস্টে অভিনেত্রী দাবি করেন, যারা ধর্ষণের মতো ভয়াবহ বিষয় সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তারাও অপরাধী। তাদেরও শাস্তির দাবি তুলেছেন অভিনেত্রী।
পোস্টে বাঁধন লিখেছেন, ‘ধর্ষণ একটি ভয়ানক অপরাধ। কিন্তু এই দেশে এটি যেন স্বাভাবিক একটা ব্যাপার হয়ে গেছে। মানুষ তখনই প্রতিবাদ করে, যখন কোনো ভয়ানক ঘটনা ভাইরাল হয়। একটা ভিডিও, খবরের ক্লিপ বা পোস্ট। কোনো ঘটনা ভাইরাল হলে হঠাৎ সবাই রেগে যায়। কিন্তু সেটাও খুব অল্প সময়ের জন্য। তারপর আবারও সবাই নিজের মতো চলতে থাকে।’
অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করে সামনে চলে যায়। আগের ঘটনা ভুলে যায়। কারণ, প্রতিদিনই তো কোনো না কোনো নতুন কাণ্ড, নতুন স্ক্যান্ডাল ঘটে। এক নারীর যন্ত্রণা ভাইরাল কনটেন্ট হয়ে দাঁড়ায়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘কেন আমরা ধর্ষণের মতো ভয়াবহ বিষয়কে একটি খবরের মতো ট্রিট করি, সংকটের মতো না? কেন এটা স্বাভাবিক হয়ে গেল? আরও ভয়াবহ হচ্ছে, কেউ কেউ এই অপরাধের ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে শেয়ার করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। যেন সেটা বিনোদনের কিছু! যারা ভিডিও ছড়িয়ে দেয় তারা নির্দোষ নয়। তারাও অপরাধী। তাদেরও শাস্তি হওয়া উচিত।’
সবশেষে বাঁধন লিখেছেন, ‘আমি ভেঙে পড়েছি। আমি রাগান্বিত। আর হ্যাঁ, আমি ভয় পাচ্ছি। কারণ, আমি একজন নারী। আমি কোথাও নিরাপদ বোধ করি না। না বাস্তব জীবনে, না অনলাইনে। ধর্ষণ কোনো কনটেন্ট নয়। মানসিক যন্ত্রণা কোনো ড্রামা নয়। এভাবে চলতে পারে না।’
Discussion about this post