নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মো. নিজামুল হক নাসিমের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। আপিল বিভাগের বিচারক থেকে অবসরে গেলে হাসিনা সরকার তাকে চুক্তিতে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান করেন। তিনি এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধানের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেশ সমালোচনার জন্ম দেন। সেই সময় রায়ের বিষয়ে কথিত স্কাইপ কথোপকথন নিয়ে বিতর্কের মধ্যে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগী এই বিচারক হাই কোর্টে ফেরত যান।
তার চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
একই প্রজ্ঞাপন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ (বাদল), বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আব্দুর রৌফ মিয়া এবং খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম হাই কোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান ২০০১ সালের ৩ জুলাই। দুই বছর পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নিয়োগ স্থায়ী না করলে তিনি আদালতে মামলা করেন। এই মামলা শেষ হয় ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ। রায়ের মাধ্যমে হাই কোর্ট বিভাগে বিচারক হিসাবে শপথ নেন বিচারপতি মো. নিজামুল হক।
এর একবছর পর ২০১০ সালের ২৫ মার্চ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে গঠিত হয় তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এই ট্রাইব্যুনালের এক রায় দিতে গিয়ে এই বিষয়ে বেলজিয়াম প্রবাসী এক আইন গবেষকের সঙ্গে কথিত স্কাইপ কথোপকথন নিয়ে বিতর্কের মধ্যে ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর তিনি ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করেন এবং হাই কোর্টে ফিরে আসেন। ট্রাইব্যুনালে কোনো রায় দেওয়ার সুযোগ তার হয়নি।
হাই কোর্টে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড শাখার চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে শপথ নেন।
অবসরে যাওয়ার পর ২০১৮ সালে সংবাদপত্রের কর্মীদের বেতনকাঠামো নির্ধারণে গঠিত নবম ওয়েজবোর্ডের নেতৃত্ব দেন তিনি। এর পরেই তিনি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হন।
বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের জন্ম ১৯৫০ সালের ১৫ মার্চ, পটুয়াখালীতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ১৯৭২-৭৩ শিক্ষাবর্ষে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্র সংসদের জেনারেল সেক্রেটারি (জিএস) ছিলেন তিনি।
Discussion about this post